ত্যাগকাব্য ভালোবাসায়

নি বে দি ত  ক বি তা

ত্যাগকাব্য ভালোবাসায়
আমরা শুধু পারি কবিতা উৎসর্গ করতে আর তিনি নিজ ভূমির জন্য উৎসর্গ করেছিলেন নিজেকে
... ...ধন্য তুমি মাহমুদ দারবিশ

রাফসান গালিব

শনিবারে পুঁতে রাখা মাইনের আঘাতে নিহত হয় জন্মদাত্রী মাতা
রবিবারে কামানের গোলায় পঙ্গু হয়ে যায় প্রিয় সন্তান
সোমবারে গুলির ছিটায় অন্ধত্ব বরণ করে জন্মদাতা পিতা
মঙ্গলবারে ধর্ষিতা হবার উদ্দেশ্যে অপহৃত হয় নিষ্পাপ বোন
বুধবারে শান্তিভঙ্গের অভিযোগে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার হয় অপ্রাপ্তবয়স্ক ভাই
বৃহস্পতিবারে বোমার আঘাতে হাসপাতাল ধ্বসে নিহত হয় গর্ভবতী প্রিয়তমা স্ত্রী
আর জুমাবারে সে একটি স্ক্র্যাচ হাতে বেরিয়ে পরে তোমার উদ্দেশ্যে
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহস্পতিবারের সকল দুঃখ কষ্ট কান্নাকে
খালি ঘরে বাতাসের সাথে তালা দিয়ে।

মিহরাবের উপর দাঁড়ানো তোমার ধবধবে সাদা
পাঞ্জাবীর অবয়বে সে তার স্বপ্নের পতাকা দেখতে পায়
রঙতুলির খাতায় প্রিয় সন্তানের আঁকা মানচিত্রে দেখতে পায়
তোমার পবিত্র চাদরের শুভ্রতায়
তোমার কণ্ঠে শুনতে পায় বোনের গাওয়া জাতীয় সংগীত
কবিতার লাইনে লাইনে তারপর নিঃশ্বাসের বিরতির মুহুর্তটাতে
ফিরে আসে জন্মদাতার মৃদু আশীর্বাদ
প্রিয়তমা স্ত্রী আর অনাগত সন্তানের হাস্যোজ্জ্বল চেহারা খুঁজে পায়
কাব্যভাষণের প্রতিটি শব্দ ও অরে
এভাবেই তোমার প্রতিটি অর শব্দ বাক্য আর ছন্দে
গড়ে উঠে একজন দেশপ্রেমিকের স্বাধীনতার স্বপ্ন
খুঁজে ফেরে তার
জন্মদাতা-দাত্রী
ভাই-বোন
অনাগত সন্তান
প্রিয়তমা স্ত্রীকে

এখন আর তোমায় দেখতে পায় না কেউ
তোমার কবিতা শুনতে পায় না, শুনতে পায় না কাব্যভাষণ
মেহরাব থেকে ভেসে আসে না গোলাপের সুবাতাসও
আলোর পাখায় ভর করে জোনাকী হয়ে উড়ে গেছ আলোর দেশে
আর এক খণ্ড জোৎøা ফেলে গেছ মেহরাবের সেই শূন্য জায়গাটায়

প্রতি সপ্তাহে জুমাবারে আছরের পর এখনো সবাই ভীড় করে
সেই মিহরাবের নীচটায় আর উপরের দিকে তাকিয়ে থাকে
তোমায় দেখবে বলে কাব্যভাষণ শুনবে বলে
প্রিয় মানুষের অনুপস্থিতিতে মিহরাবের পাশে
দাঁড়িয়ে থাকা লম্বা জলপাই গাছটার দুলুনিতে
ভেসে আসে তোমার কবিতা, কাব্য সংগীতে
মৃদুভাবে নড়ে উঠে জানালার খোলা কপাট
তারপর মিহরাবের কারুকার্যপূর্ণ দেয়ালখানিতে
আকষ্মিক দিনের আলোয় নেমে আসে
এক খণ্ড জোৎøার অলৌকিক প্রজেক্টর
যার মধ্যে তোমাকে দেখে আবেগে আপ্লুত
হয়ে পড়ে সবাই আর অশ্র“ সংবরণ করে
তেজোদ্দীপ্ত কণ্ঠে একযোগে উচ্চারিত করে
স্বাধীনতার ঘোষণা...

ফিরে যাওয়ার আগ মুহুর্তে কেউ একজন প্রতিবারই
খোলা আকাশের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে
বলে উঠে, “হে মালিক! তুমি আমাদের কবিকে গ্রহণ করো”
সেই সাথে সবার কণ্ঠ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তর ছুঁয়ে
প্রতিধ্বনি হয়ে ফিরে আসে তিনবার
আমিন আমিন আমিন!!!

1 comment:

  1. Onek bhalo laaglo tomaar kobita. Mashallah.
    -Tomar bhayiya, Abdullah

    ReplyDelete

পাঠক সংখ্যা

free counters